SPORTS JOBS 7WONDERS

Ads by Cash-71

চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষা

Posted by methun

চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে জেলহত্যা মামলা। বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের কার্যতালিকায় এলে চূড়ান্ত শুনানি হবে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ লিভ টু আপিল (নিয়মিত আপিলের আবেদন) করলে ১১ জানুয়ারি ওই সময়কার প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সরকারের এ আবেদন মঞ্জুর করেন। আদেশে সরকারকে ৩০ দিনের মধ্যে নিয়মিত আপিল করতে বলা হয়। বর্তমানে সরকার আপিল শুনানির জন্য আবেদন করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ছাড়া ঐ সময় সরকারের করা অপর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দফাদার মারফত আলী শাহ ও আবুল হাসেম মৃধাকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ না করলে তাদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠাতে আইনশৃক্সখলা রক্ষাবাহিনীর প্রতিও নির্দেশ দেন আদালত। আসামিরা কয়েক যুগ ধরে বিদেশে আত্মগোপন করে থাকায় নিম্ন আদালতে তাদের আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা ক্ষীণ। একই কারণে আইনশৃক্সখলা রক্ষাবাহিনীও এদের ধরতে পারেনি বলে জানা গেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী খন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে সরকারে যোগদানের প্রস্তাব দেয়। বঙ্গবন্ধুর আজীবন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জাতীয় চার নেতা ঘৃণাভরে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ১৫ আগস্টের সেই ঘাতকরা পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বর কারাগারে ঢুকে নিউ সেলের ভেতর অন্তরীণ চার নেতাকে প্রথমে গুলি করে ও পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় ৪ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক কাজী আবদুল আউয়াল বাদী হয়ে সেনাবাহিনীর রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত চার-পাঁচজন সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। কিন্তু তৎকালীন সরকারসহ পরবর্তী সরকারগুলোর বাধার মুখে মামলার তদন্ত ২১ বছর থেমে থাকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তদন্ত শুরু হয়। ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্তদের প্রায় সবাই সেনা কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি। অভিযুক্তের তালিকায় দু-একজন রাজনীতিকও ছিলেন, যারা নিম্ন আদালতের রায়ে খালাস পেয়েছেন। জিম্বাবুয়েতে আত্মগোপনকারী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ পাশা মামলা চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় অভিযুক্তের তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন। রায়ে রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও আবুল হোসেন মৃধাকে ফাঁসি, কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) বজলুল হুদা, কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) শরীফুল হক ডালিম, কর্নেল (অব.) এম বি নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) আহাম্মদ শরিফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) কিসমত হাশেম, ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসারীসহ ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাবেক মন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম ওবায়দুর রহমান, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর, তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানকে খালাস দেওয়া হয়। এর প্রায় চার বছর পর বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি শেষে শুধু রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের ফাঁসি বহাল রাখেন। এ ছাড়া পলাতকরা বাদে নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত সবাই খালাস পান। ফারুক রহমান, শাহরিয়ার রশিদ, মহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা, মারফত আলী ও আবুল হোসেনের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফারুক রহমান, শাহরিয়ার রশিদ, মহিউদ্দিন আহমেদ ও বজলুল হুদার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় শুধু মারফত আলী ও আবুল হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে আপিল বলবৎ আছে। সরকারপক্ষে বিশেষ কেঁৗসুলি হিসেবে মামলা পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

0 comments:

Post a Comment