নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে নির্ধারিত সংলাপের পর পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স¤প্রতি এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আলাদা চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ (ঞ) ধারাটি রহিত করার বিশেষ অনুরোধ জানান এরশাদ।
নির্বাচনের আগ মুহূর্তে মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলবদল ঠেকাতে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৮ সালে বর্তমান নির্বাচন কমিশন আইনী সংস্কারের সময় এ বিধানটি যুক্ত করে। নবম সংসদে বিধানটি শিথিল করা হলেও আগামী সংসদ থেকে তা কার্যকর হচ্ছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) অনুচ্ছেদ ১২-এর ১ (ঞ) উপধারায় বলা হয়েছে- কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলে তিন বছরের সদস্যপদ না থাকলে একজন ব্যক্তি ওই দল থেকে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সিইসি এটিএম শামসুল হুদা এরশাদের প্রস্তাব কমিশন সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার মতামতগুলো পর্যালোচনা করে আইনী সংস্কারের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে ইসির প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
জাতীয় পার্টির এ প্রস্তাবের বিষয়ে কমিশন সভায় আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
অবশ্য আরপিও'র সংশ্লিষ্ট উপ-ধারাটি বাতিলে ইসির আপত্তি রয়েছে বলে গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত জাপা'র সঙ্গে নির্ধারিত সংলাপে মত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
ওই দিন সিইসি জানান, দলীয় মনোনয়ন পেতে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে ন্যূনতম তিন বছরের সম্পৃক্ততা থাকা উচিত।
ইসি আইনের ১২ (ঞ) ধারা রহিত করার প্রস্তাবের বিষয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, "এ ধারাটি সম্পূর্ণ রহিত করার জন্য আমি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।"
এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মহাজোটের অন্যতম এ শরিক দলের চেয়ারম্যান জানান, এটা সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কে কখন কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান বা কখন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন- তা একজন নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়।
"নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতার বিষয়াবলীর মধ্যে রাজনীতি করার সময়সীমা বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না, যোগ করেন এরশাদ।
নাগরিকের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষার স্বার্থে আলোচিত ধারাটি বাতিল করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি।
"আমার জানা মতে, আপনারা এ ধারাটি বহাল রাখলে সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রশ্নে কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের আদালতে রিট করার একটি প্রস্তুতি আছে। এ ধরনের অযাচিত আইনি জটিলতা এড়ানোর জন্যও উলি¬খিত ধারাটি অপসারণ করা প্রয়োজন।"
নির্বাচনী আইনে আরো সংস্কার, সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতি, সীমানা নির্ধারণ আইন ও বিধি, নির্বাচনী প্রচারণা (জনতহবিল) আইনের খসড়া নিয়ে গত ৭ জুন থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে ইসি।
তবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনা ছয়টি দল ওই সংলাপে সাড়া দেয়নি।
বর্তমান ইসির মেয়াদের (ফেব্র"য়ারি পর্যন্ত) আগেই প্রস্তাবিত আইনগুলোর খসড়া চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে পাঠানোর কথা রয়েছে।