'দুর্নীতির কারণে' পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন 'বন্ধ হয়ে যাওয়া' দেশের জন্য অসম্মানজনক বলে মন্তব্য করেছেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপার্সন রোববার রাতে বলেন, "বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই কোনো প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করার নজির নেই। অথচ এবার বর্তমানের সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্পে তারা অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে।
"এটা আওয়ামী লীগের জন্য অসম্মানজনক না হলেও বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়।"
রোববার রাতে খালেদা তার গুলশান কার্যালয়ে দলের রাজনৈতিক প্র্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্প তদারকির জন্য প্রাক নির্বাচনী তালিকায় থাকা কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের 'দুর্নীতি'র তদন্তে বিশ্ব ব্যাংক কানাডা পুলিশকে অনুরোধ করলে পদ্মা সেতুতে 'দুর্নীতি'র বিষয়টি প্রকাশ্য হয়।
এরপর বিশ্বব্যাংক কয়েকদিন আগে এ প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিতের কথা জানায়। দেশের সর্ববৃহৎ এ নির্মাণ প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্র"তি দিয়েছিল সংস্থাটি।
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশের সর্বনাশ করেছে দাবি করে তিনি বলেন, "২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এখন আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য টাকা।"
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে বল্ওে অভিযোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ 'উঠতি' ব্যবসায়ীদের মনোনয়ন দিয়ে রাজনীতি বিনষ্ট করেছে- এ মন্তব্য করে খালেদা বলেন, "জিয়াউর রহমানের আদর্শ ছিলো ড্রইং রুমে বসে রাজনীতি নয়, রাজনীতি করতে হলে মানুষের কাছে যেতে হবে। তিনি আমাদের এই আদর্শই শিখিয়েছেন।"
খালেদা জিয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দকে প্রশিক্ষন বিষয়বস্তুর তালিকা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, সমুদ্রসীমানা ও সম্পদ, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, '৭৪ এর দূর্ভিক্ষের কারণ ইত্যাদি যুক্ত করার আহবান জানান।
<ন>প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু
রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পাঠ্যসূচিতে রয়েছে- ভারত-বাংলাদেশ অভিন্ন নদীমালা ও পানিচুক্তি, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, বিশ্বায়ন ও সা¤প্রতিক বিশ্ব রাজনীতি এবং যুদ্ধ পরবর্তী সরকারের কার্যক্রম, '৭৫-পূর্ব রাষ্ট্রের মূলনীতি, একদলীয় শাসনব্যবস্থা ও ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর।
প্রশিক্ষণার্থীদের ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষার পাস নম্বর ধরা হয়েছে ৪০। কৃতকার্যদের সনদপত্র এবং ৭ বিভাগের সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের প্রশিক্ষণ ক্রেস্ট দেবেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে খালেদা জিয়া বলেন, "দলের যেসব নেতা-কর্মীকে প্রশিক্ষণের জন্য ডাকা হবে তাদের সবাইকে আসতে হবে। প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তুর ওপর আমাদের বিশেষজ্ঞরা যেসব মতামত দেবেন তা পরবর্তী সময়ে বুকলেট আকারে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।"
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সহসভাপতি, চেয়াপার্সনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অঙ্গসংগঠনের ৪৩ জন নেতা অংশ নেন।
এদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আর এ গনি, মাহবুবুর রহমান, এম কে আনোয়ার, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি কামাল ইবনে ইউসুফ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুন আল রশীদ, ওসমান ফারুক, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, মজিবর রহমান সারওয়ার, মশিউর রহমানসহ অঙ্গসংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা ছিলেন।
<ন>উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
অনুষ্ঠানের শুরুতে দলের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদুজ্জামান ও কবীর মুরাদ রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তুলে ধরেন।
গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ের নিচ তলায় একটি কক্ষে এই অনুষ্ঠানটি হয়। শ্রেণীকক্ষের মতো অনুষ্ঠানস্থলে একটি লেখার বোর্ড বসানো হয়। সামনের চেয়ারের বসে জ্যেষ্ঠ নেতারা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য শোনেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মনিরুজ্জমান মিঞা, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার বক্তব্য দেন।
সূচনা বক্তব্যে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "চেয়ারপার্সনের নির্দেশে এই রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা থেকে শুরু করে সব নেতাদের এই কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।"
Ads by Cash-71
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment