SPORTS JOBS 7WONDERS

Ads by Cash-71

এতো গাড়ি কোথা থেকে, জানতে চান হাসিনা

Posted by methun

বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচিকে 'গাড়ির প্রদর্শনী' হিসেবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেছেন, ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রতিটি গাড়ির মালিকের অর্থের উৎস খুঁজে বের করতে হবে।

রোববার গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "অনেক সাধ করে ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দীন আর মইনুদ্দিনদের এনেছিলেন। তারা তো সবাই আপনার লোক ছিল। তারা তো আপনাকে ক্ষমতায় বসায়নি। আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলেই যে তারা আপনাকে গদীতে বসাবেন- তার কি গ্যারান্টি আছে? আপনাকে আবার যে জেলে যেতে হবে না, তার নিশ্চয়তা কি?"

বিগত চারদলীয় জোটের মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেন। এক পর্যায়ে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি মইন ইউ আহমেদের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর চাপে ফখরুদ্দীন আহমদকে প্রধান উপদেষ্টা করে নতুন উপদেষ্টা পরিষদকে দায়িত্ব দেন রাষ্ট্রপতি।

ফখরুদ্দীন আহমদের সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে দুর্নতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার চলতি বছর সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাই বিলুপ্ত করে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে। ওই ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে গত ১০ অক্টোবর ঢাকা-সিলেট রোডমার্চ করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো, যাতে দুই হাজারেরও বেশি গাড়ি অংশ নেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, "রোড মার্চ মানে পায়ে হেঁটে কর্মসূচি পালন। কিন্তু বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া গাড়িতে চড়ে কার র‌্যালি করলেন। এটা রোড মার্চ নয়, রোড শো।

ওই 'র‌্যালিতে' দুই হাজার 'দামি' গাড়ি অংশ নেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এতো গাড়ির টাকা পেলেন কোথা থেকে? প্রত্যেকটা গাড়ির নম্বর প্লেট নিয়ে খুঁজে বের করতে হবে- কোথা থেকে এসব গাড়ি এসেছে। এসব গাড়ি কেনার টাকার উৎস কী- তাও খুঁজে বের করতে হবে।"

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখনো 'বিধবা ভাতা' নিচ্ছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, "জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ছেঁড়া গেঞ্জি আর ভাঙা স্যুটকেস দেখিয়ে তিনি বিধবা ভাতা নিয়েছেন। দুই পুত্রের পড়াশোনার জন্য সরকারি ভাতা নিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা এখনো বিধবা ভাতা নিচ্ছেন, আমরা ক্ষমতায় এসেও তা বন্ধ করিনি।"

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিষয়ে ইঙ্গিগত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "যারা এতিমদের টাকা লুটে খায়, তাদের দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।"

খালেদার ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার এবং ২১ অগাস্ট গ্রেনেড মামলার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, "জনগণের অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করবেন; দুর্নীতি করবেন; জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে, গ্রেনেড মেরে মানুষ মারবেন- কিন্তু তাদের কিছু করা যাবে না- এমন আব্দার দেশের জনগণ মেনে নেবে না।"

"যারা হত্যা, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, লুটপাট ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের বিচার অবশ্যই হবে," যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্বজুড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে থাকলেও সরকার দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে কম দামে খাদ্য সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের পাশের দেশেই ৭০/৮০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু, আমরা বেশি দামে চাল কিনে, কম দামে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিক্রি করছি।"

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের পাঁচটি আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করায় সমাবেশে স্থানীয় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন দলটির সভানেত্রী।

এই সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকেই গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা বাস, ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন করে মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হতে থাকে। এ সময় বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন বহন করেন তারা। অনেকের কাছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার প্রতিকৃতিও দেখা যায়।

বিকাল ৪টার পর শেখ হাসিনা সভামঞ্চে উঠলে উপস্থিত জনতা 'জয় বাংলা' ধ্বনি দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়।

অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, গাজীপুর-৩ আসনের সাংসদ রহমত আলী, গাজীপুর-৫ আসনের সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকী, গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর-১ আসনের সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ জাহানারা বেগম, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান, শ্রীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন সবুজ, ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর নাহার, গাজীপুরের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমতউল্লাহ খান সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী দুপুরে মাওনায় দেশের সবচেয়ে বড় ইংরেজি মাধ্যমের আবাসিক স্কুল এবং ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লেজ হারবার স্কুল অ্যান্ড স্পোর্টস একাডেমী উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, খেলাধূলায় জড়িত থাকলে শিশুরা সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

অভিভাবকরা যেন তাদের শিশুদের অহেতুক চাপ না দেয় তার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "ছেলেমেয়েদের চেয়ে এখন মায়েদের বেশি টেনশন। শিক্ষার্থীরা যেন সহজ ও সুন্দরভাবে গড়ে উঠতে পারে- তা নিশ্চিত করতে হবে।"

এ সময়, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং গাজীপুর-৩ আসনের সাংসদ রহমত আলী উপস্থিত ছিলেন।

0 comments:

Post a Comment