SPORTS JOBS 7WONDERS

Ads by Cash-71

সম্মিলিতভাবে জলবায়ু উদ্বেগ তুলে ধরার আহ্বান হাসিনার

Posted by methun

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে সপ্তদশ জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনের (কোপ ১৭) আগে সম্মিলিতভাবে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি মাসের শেষদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে এ সম্মেলন শুরু হবে।

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে হুমকিতে থাকা দেশগুলোর জোট ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বার্ষিক সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ১৩ হাজার কোটি ডলার এবং সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কিছু দেশ 'ব্যাপক অবিচারের' মুখোমুখি হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে অবশ্যই তা স্বীকার করতে হবে।

"জলবায়ু পরিবর্র্তনের জন্য আমাদের খুবই সামান্য বা কোনো ভূমিকা না থাকলেও আমরা এর ক্ষতচিহ্ন বহন করছি। চরম অবিচারের শিকার আমরা, বিশ্বকে তা স্বীকার করতে হবে।"

২০০৯ সালে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় সভা হয় গত বছর কিরিবাতিতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুঃখ করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় হুমকিতে থাকা দেশগুলোতে জাতীয় পর্যায়ে নেওয়া পদক্ষেপগুলোতে সহায়তা দেওয়ার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট তৎপরতা দেখা যায় না।

"জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় গঠিত তহবিল ও প্রযুক্তিতে সরাসরি ও সহজে প্রবেশের কোনো প্রমাণ আমরা দেখি না। গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড পরিচালনার জন্য ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কীভাবে তহবিল সংগ্রহ করা হবে সে বিষয়েও স্পষ্ট কিছু আমরা দেখিনি।"

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৮ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডারবানে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনের আগেই এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগ তুলে ধরার জন্য হুমকিতে থাকা দেশগুলোর একত্রিত হওয়া উচিত।

"জলবায়ু পরিবর্তনের মুখে আমাদের বৈশ্বিক অংশীদারদের সম্পৃক্ত করা এবং একটি কার্যকর অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এগোনো প্রয়োজন।"

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন, ডারবানেই গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের তহবিল সংগ্রহ শুরু করা প্রয়োজন।

"গত বছর কানকুনে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো ডারবানে অবশ্যই তা শেষ করতে হবে। ফাঁকা বুলি কোনো কাজে আসবে না।"

তিন দিনের সফরে রোববার ঢাকা এসেছেন বান কি মুন।

গত বছর মেক্সিকোর কানকুনে কোপ ১৬ সম্মেলনে গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের তহবিল সংগ্রহ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মতো যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয় সেগুলোর প্রয়োজনে সাড়া দিতে ডারবানে অবশ্যই ক্ষয়ক্ষতির ওপর কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।"

"সবচেয়ে দরিদ্র ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের মূল্য দিতে বলতে পারি না।"

ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে একটি স¤প্রসারিত জলবায়ু চুক্তি সম্ভব করতে সরকারগুলো কিয়োটো প্রটোকল নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতিসংঘ প্রধান।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের জনগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে বান কি মুন বলেন, ১৯৯০ সালের একটি ঘূর্ণিঝড়ে যেখানে এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায় সেখানে ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ে মাত্র চার হাজার মানুষ মারা গেছে।

"শুধু বাইসাইকেল ও বাঁশির সাহায্যে স্বেচ্ছাসেবীরা ৩০ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে সহায়তা করেছিলো।"

এজন্য বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম-সিপিপি) প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বাড়লে বাংলাদেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বার্ষিক সভায় ঢাকা ঘোষণা গৃহীত হবে।

0 comments:

Post a Comment