SPORTS JOBS 7WONDERS

Ads by Cash-71

বিকল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফাঁদে পিডিবি

Posted by methun

বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২ হাজার ২৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হলেও ১৯টি ইউনিট বিকল থাকায় উৎপাদন কমেছে ১৬ শ' মেগাওয়াটের বেশি। ফলে লোড-শেডিং থেকে মুক্তি মিলছে না দেশবাসীর।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান এ এস এম আলমগীর কবীর বলছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকল কেন্দ্রগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছু ইউনিট শিগগিরই উৎপাদনে ফিরবে।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। গত আড়াই বছরে প্রায় অর্ধশত নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি করা হয়েছে। এই সময়ে উৎপাদনে এসেছে ১৮টি। কিন্তু দেশের প্রায় ৭০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি কেন্দ্রের ১৯টি ইউনিট যান্ত্রিক ত্র"টির কারণে বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবির) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ঘোড়াশাল কেন্দ্রের ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই নম্বর ইউনিট, একই কেন্দ্রের ২১০ মেগাওয়াটের ছয় নম্বর ইউনিট, হরিপুর কেন্দ্রের ৩৩ মেগাওয়াটের তিন নম্বর ইউনিট, আশুগঞ্জ কেন্দ্রের ৬৪ মেগাওয়াটের এক নম্বর ইউনিট, একই কেন্দ্রের ১৫০ মেগাওয়াটের চার নম্বর ইউনিট, ২১০ মেগাওয়াটের চট্টগ্রামের রাউজান কেন্দ্র, ৪৫ মেগাওয়াটের বাঘাবাড়ীর ওয়েস্টমন্ট কেন্দ্র, ৩৩ মেগাওয়াটের ভোলা কেন্দ্র, ২১০ মেগাওয়াটের সিদ্ধিরগঞ্জ কেন্দ্র, ২০ মেগাওয়াটের সিলেট কেন্দ্র, ১২৫ মেগাওয়াটের বড়পুকুরিয়া তাপভিত্তিক কেন্দ্র, শাহজীবাজার কেন্দ্রের ৩০ মেগাওয়াটের পাঁচ ও ছয় নম্বর ইউনিট এবং ৩৫ মেগাওয়াটের আট নম্বর ইউনিট, ৬০ মেগাওয়াটের খুলনা কেন্দ্র, ৭৮ মেগাওয়াটের ঘোড়াশাল ম্যাক্স পাওয়ার প্লান্ট, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫০ মেগাওয়াটের তিন নম্বর ইউনিট এবং শিকলবাহা কেন্দ্রের ৬০ এবং ১৫০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

এর মধ্যে চট্টগ্রামের রাউজান কেন্দ্র এবং শিকলবাহার দুটি কেন্দ্র গ্যাসের অভাবে বন্ধ রয়েছে বলে পিডিবি চেয়ারম্যান জানান।

এসব ইউনিটের মধ্যে একটি দুই বছরের বেশি, চারটি ইউনিট প্রায় দেড় বছর এবং বাকিগুলো মোটামুটি এক বছর বা তার কম সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।

বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ৬ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করে। ওইদিন বিদ্যুতের উৎপাদন ছিলো ৩২৭৬ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। এরপর নতুন নতুন কেন্দ্র চালু হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে যোগ হয় ২ হাজার ২৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। গত ২৯ অগাস্ট দেশে রেকর্ড ৫ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

কিন্তু ২০০৯ সালের জুন থেকে এ পর্যন্ত বন্ধ হওয়া ইউনিটগুলোর কারণে উৎপাদন কমেছে ১৬ শ' মেগাওয়াটের বেশি। ফলে অংকের হিসাবে উৎপাদন আসলে বেড়েছে ৬ শ' মেগাওয়াটের মতো।

দেশে বর্তমানে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মেগাওয়াট। ফলে দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থেকে যাচ্ছে সব সময়।

কর্মকর্তারা বলছেন, উৎপাদন বাড়লেও চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ দিতে পারছে না পিডিবি। ফলে লোডশেডিংও আশানুরূপ হারে কমছে না।

গত ১৮ অগাস্ট নিজ এলাকায় বিদ্যুৎ সঙ্কটের জন্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাকে আক্রমণ করে তীব্র ভাষায় বক্তব্য দেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমদ।

তিনি বলেন, ভোলার ৩৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হঠাৎ বন্ধ হওয়ার পর আর চালু হয়নি।

ঘন ঘন লোড-শেডিংয়ের প্রতিবাদে সোমবারও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্থানে লোড-শেডিংয়ের কারণে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।

এ বিষয়ে পিডিবির চেয়ারম্যান এ এস এম আলমগীর কবীর মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "যান্ত্রিক ত্র"টি ও গ্যাস সংকটের কারণে এসব কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছু কেন্দ্র শিগগির উৎপাদনে যাবে।"

তিনি জানান, সরকার ২০১৬ সালের মধ্যে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে।

এর আওতায় সরকারি ও বেসরকারি খাতে ২০১০ সালে ৭৭৫ মেগাওয়াট, ২০১১ সালে ২ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট, ২০১২ সালে ১ হাজার ৯০১ মেগাওয়াট, ২০১৩ সালে ২ হাজার ১৭৪ মেগাওয়াট, ২০১৪ সালে ২ হাজার ৩২৩ মেগাওয়াট, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট এবং ২০১৬ সালে ২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

আলমগীর কবীর জানান, পরিকল্পনার অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৪৫টি বিদ্যুুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি হয়েছে। আর এই সময়ে ১৮টি কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। বাকি ২৬টির নির্মাণ কাজ চলছে, যেগুলো ২০১৩ সালের মধ্যে উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

0 comments:

Post a Comment