SPORTS JOBS 7WONDERS

Ads by Cash-71

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা আড়ালেই মূল পরিকল্পনাকারী

Posted by methun

ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারীরা আড়ালেই রয়ে গেলেন। দীর্ঘ সাত বছরে ছয়বার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হলেও হামলার পরিকল্পনাকারীদের এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিভীষিকাময় ওই গ্রেনেড হামলার পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা জড়িত। তদন্তে যাদের সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। যে কারণে ওই পরিকল্পনাকারীরা তদন্তের বাইরে যেমন রয়ে গেলেন, তেমনি হামলার ঘটনা থেকেও তারা পার পেয়ে গেলেন। তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি ৩ জুলাই আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই অভিযোগপত্রে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ নতুন করে ৩০ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট স্মরণকালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তবে এর পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী কারা_ এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। এ অবস্থায় বহুল আলোচিত গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে শীঘ্রই।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধিকতর তদন্তে সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এ চাঞ্চল্যকর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। মূল বিচারের কার্যক্রম শুরুর জন্য সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে মামলার নথিপত্র গত সপ্তাহে মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান হয়। এরপর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পলাতক ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণে করার নির্দেশ দিয়ে জারি করা পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিসহ পত্রিকার কপি আদালতে দাখিল করা হয়। পরে মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত মর্মে উল্লেখ করে নথি দায়রা আদালতে পাঠিয়ে দেন। ২৫ আগস্ট মামলার অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করার কথা রয়েছে। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ গতকাল বলেছেন, আগামী মাস থেকে এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। আগামী বছর তা শেষ হতে পারে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন প্রাণ হারান। আহত হন পাঁচ শতাধিক। চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পর মতিঝিল থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মূল কুশীলবদের বাঁচানোর জন্য চারদলীয় জোট সরকার গ্রেনেড হামলার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জমজমাট জজ মিয়া নাটক সাজায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ওয়ান-ইলেভেনের পর ফের মামলার তদন্ত শুরু হয়। তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর। ঘটনার ৪৬ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডি অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই অভিযোগপত্রে মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। গ্রেনেডের উৎস ও মদদদাতাদের শনাক্তের জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর আদালত মামলার বর্ধিত তদন্তের আদেশ দেন। ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট তদন্ত শুরু করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ। ১৩ দফা সময় বাড়িয়ে ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার তদন্ত শেষ হয়। বর্ধিত এই তদন্তে নতুন করে ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। প্রথম চার্জশিটে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল, আবদুর রাজ্জাক, আমীর হোসেন আমুসহ ৪০৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। আলামত জব্দ দেখান হয়েছিল ৬৯ ধরনের।

প্রথম চার্জশিট ও বিচার : দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার ৪৬ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডির সিনিয়র এএসপি ফজলুল কবীর ২২ জনকে আসামি করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুই মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। মামলা দুটি একই বছর দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ২১ আগস্টের ঘটনায় বিস্ফোরক মামলার বিচার চলছে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হকের আদালতে। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ চেমন চৌধুরীর আদালতে চলছে হত্যা মামলার বিচার। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। আদেশে নেপথ্য মদদদাতা ও গ্রেনেডের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বলা হয়। এরপর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ মামলাটির অধিকতর তদন্ত শুরু করেন। অধিকতর তদন্তের প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য ১৩ দফা সময় বাড়িয়েছেন আদালত।

0 comments:

Post a Comment