বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তার ভূয়সী প্রশংসা করলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী। তিনি বলেন, 'এখানকার মানুষের আতিথেয়তা দেখে এ দেশকে নিজের দেশ ভাবতে গর্ববোধ করি। এ জন্যই আমার সব সময় বাংলাদেশে আসতে ইচ্ছে হয়। তাই প্রতি বছর আমার শিডিউলে ঢাকা সফর রাখতে বলেছি। রুশনারা আলী গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালে সিলেটের বিশ্বনাথে জন্ম নেওয়া রুশনারা ব্রিটিশ লেবার পার্টির রাজনীতিবিদ ও ইয়ং ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক। ২০১০ সালে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বাউ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য রুশনারা ব্রিটিশ ছায়া মন্ত্রিসভারও সদস্য। তিনি মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে পূর্ব লন্ডনে যান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জনস কলেজে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ডিগ্রিধারী রুশনারা আলী জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় জনমত গঠনের কাজ করছেন। এ জন্য তিনি গত বছরও ঢাকা সফর করেন। একই উদ্দেশ্যে রবিবার তিনি ঢাকায় এসেছেন। রুশনারা বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের পুরো দোষ তাদেরই। তারা এর মাধ্যমে তাদের বাণিজ্য বাড়িয়েছে, যার সুবিধা তারা এখনো নিচ্ছে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দিতে তারা দীর্ঘসূত্রতা করছে।' বিগত কয়েকটি সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি বলে খানিকটা হতাশ রুশনারা আশা করেন শীঘ্রই অবস্থার উন্নতি হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'এখানে ব্রিটেনকেও নেতৃত্ব দিতে হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে এবং তা করা হচ্ছে।' তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যথেষ্ট এগিয়েছে।
তবে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।' বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান, জানতে চাইলে রুশনারা বলেন, 'আমি স্বাধীনতার চার দশক পূর্তির অনুষ্ঠানে পরবর্তী চার দশকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমি মনে করি, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও বাংলাদেশ শীঘ্রই আরও শক্তিশালী দেশে পরিণত হবে। তবে এটা মাথায় রাখতে বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রথম চলি্লশ বছরে যেসব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছে, পরবর্তী চলি্লশ বছরে আরও বেশি চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তার জন্য অনেক বেশি প্রস্তুতি প্রয়োজন।' রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'ব্রিটেন সরকারের মতো আমি ও আমার দল বাংলাদেশের রাজনীতি গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে এখানে বিরোধ চলছে, তবে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। এটা আমার মনে হয়, দুই নেত্রীও বোঝেন। আমার আশা, তারা এমন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করবেন না যাতে সহিংসার সৃষ্টি হয়।' রুশনারার মতে, শুধু ভারত-চীন নয়, পাকিস্তানের সঙ্গেও বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়াতে আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করা উচিত। সড়কপথ বা পানিপথ, যে কোনো পদ্ধতিতেই এ যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। তিনি বলেন, 'আমি ভারত-বাংলাদেশ ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট বিষয়ে তেমন খবর না রাখলেও আমি বলব পাকিস্তান, চীন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের অন্যতম উদাহরণ।' আঞ্চলিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় উল্লেখ করে ব্রিটিশ এমপি বলেন, 'আমেরিকা-ব্রিটেন ও জাপানের অবস্থান অনেক দূরত্বে। কিন্তু বাংলাদেশ দুটি উদীয়মান শক্তির পাশে অবস্থান করছে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে অনেক বড় অর্থনীতির দেশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে।' রুশনারা আলী আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ সফল হয় না শুধু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের স্বজনরা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে এসে দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়েন।' প্রবাসীদের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে রুশনারা বলেন, 'আমার দল ও ব্রিটেন সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছি। একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি মনে করি, প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ সুযোগ দেওয়া উচিত, তাতে বাংলাদেশরই লাভ।' ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের স্বার্থরক্ষায় কী অবদান রাখছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি নিজে ছোটবেলায় ব্রিটেনে গিয়েছি। সে কারণে আমি বুঝি একজন অভিবাসীর কী কী সমস্যা হয়। কিছুদিন আগেও ব্রিটিশ সরকারি সংস্থার জেরার মুখে যখন তখন পড়তে হতো অভিবাসীদের। এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এ জন্য আমি আমার পার্টির মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছি। এ ছাড়া আমি বাংলাদেশিদের জমিসংক্রান্ত অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি।'
১৯৭৫ সালে সিলেটের বিশ্বনাথে জন্ম নেওয়া রুশনারা ব্রিটিশ লেবার পার্টির রাজনীতিবিদ ও ইয়ং ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক। ২০১০ সালে বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বাউ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য রুশনারা ব্রিটিশ ছায়া মন্ত্রিসভারও সদস্য। তিনি মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে পূর্ব লন্ডনে যান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জনস কলেজে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ডিগ্রিধারী রুশনারা আলী জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় জনমত গঠনের কাজ করছেন। এ জন্য তিনি গত বছরও ঢাকা সফর করেন। একই উদ্দেশ্যে রবিবার তিনি ঢাকায় এসেছেন। রুশনারা বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের পুরো দোষ তাদেরই। তারা এর মাধ্যমে তাদের বাণিজ্য বাড়িয়েছে, যার সুবিধা তারা এখনো নিচ্ছে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ দিতে তারা দীর্ঘসূত্রতা করছে।' বিগত কয়েকটি সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কোনো সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি বলে খানিকটা হতাশ রুশনারা আশা করেন শীঘ্রই অবস্থার উন্নতি হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'এখানে ব্রিটেনকেও নেতৃত্ব দিতে হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে এবং তা করা হচ্ছে।' তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যথেষ্ট এগিয়েছে।
তবে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।' বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান, জানতে চাইলে রুশনারা বলেন, 'আমি স্বাধীনতার চার দশক পূর্তির অনুষ্ঠানে পরবর্তী চার দশকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমি মনে করি, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও বাংলাদেশ শীঘ্রই আরও শক্তিশালী দেশে পরিণত হবে। তবে এটা মাথায় রাখতে বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রথম চলি্লশ বছরে যেসব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছে, পরবর্তী চলি্লশ বছরে আরও বেশি চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তার জন্য অনেক বেশি প্রস্তুতি প্রয়োজন।' রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'ব্রিটেন সরকারের মতো আমি ও আমার দল বাংলাদেশের রাজনীতি গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে এখানে বিরোধ চলছে, তবে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। এটা আমার মনে হয়, দুই নেত্রীও বোঝেন। আমার আশা, তারা এমন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করবেন না যাতে সহিংসার সৃষ্টি হয়।' রুশনারার মতে, শুধু ভারত-চীন নয়, পাকিস্তানের সঙ্গেও বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়াতে আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করা উচিত। সড়কপথ বা পানিপথ, যে কোনো পদ্ধতিতেই এ যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। তিনি বলেন, 'আমি ভারত-বাংলাদেশ ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট বিষয়ে তেমন খবর না রাখলেও আমি বলব পাকিস্তান, চীন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের অন্যতম উদাহরণ।' আঞ্চলিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় উল্লেখ করে ব্রিটিশ এমপি বলেন, 'আমেরিকা-ব্রিটেন ও জাপানের অবস্থান অনেক দূরত্বে। কিন্তু বাংলাদেশ দুটি উদীয়মান শক্তির পাশে অবস্থান করছে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে অনেক বড় অর্থনীতির দেশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে।' রুশনারা আলী আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ সফল হয় না শুধু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের স্বজনরা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে এসে দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়েন।' প্রবাসীদের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে রুশনারা বলেন, 'আমার দল ও ব্রিটেন সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছি। একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি মনে করি, প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ সুযোগ দেওয়া উচিত, তাতে বাংলাদেশরই লাভ।' ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের স্বার্থরক্ষায় কী অবদান রাখছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি নিজে ছোটবেলায় ব্রিটেনে গিয়েছি। সে কারণে আমি বুঝি একজন অভিবাসীর কী কী সমস্যা হয়। কিছুদিন আগেও ব্রিটিশ সরকারি সংস্থার জেরার মুখে যখন তখন পড়তে হতো অভিবাসীদের। এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এ জন্য আমি আমার পার্টির মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছি। এ ছাড়া আমি বাংলাদেশিদের জমিসংক্রান্ত অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি।'
0 comments:
Post a Comment