বছর বছর বাড়ছে জ্বালানি খাতে সরকারের ভর্তুকি। গত অর্থবছর বিপিসির ভর্তুকি ছিল আট হাজার কোটি টাকার ওপরে। চলতি অর্থবছর আমদানি চাহিদার বিপরীতে এ খাতে ভর্তুকি চাওয়া হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা বিগত অর্থবছরের তিনগুণেরও বেশি। জ্বালানি খাতে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয় ডিজেল, ফার্নেস অয়েল ও গ্যাসে। সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ডিজেল, ফার্নেস অয়েল ও গ্যাস ব্যবহৃত হয়। ভর্তুকি-মূল্যে সরকারকে এসব পেট্রোলিয়াম সরবরাহ করতে হচ্ছে বলে এ খাতে দ্রুত হারে বাড়ছে ভর্তুকি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি বলেন, অতীতে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম বেড়ে যাওয়ার পর শুল্ক প্রত্যাহার করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এবারও কর তুলে দিয়ে তা করা যেত। ভর্তুকিও হ্রাস পেত। দেশে মূল্যবৃদ্ধির পর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম পড়ে গেছে। এ ছাড়া জ্বালানি আমদানিতে কী পরিমাণ শুল্ক ও কর আদায় করা হচ্ছে সরকার তা জানে। তা কমিয়ে দিলে দাম বাড়ানোর দরকার হয়তো পড়ত না। ভর্তুকির পরিমাণও কমত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সরকারকে সর্বোচ্চ ৭০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি আমদানি করতে হবে। এতে সরকারের গড় আমদানি ব্যয় দাঁড়াবে ৪ হাজার ৬৯৫ হাজার কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর এর বিপরীতে সরকারের শুল্ক আদায় হবে ৪ হাজার ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বিপিসি ২০০৭ সালে সরকারকে শুল্ক দিয়েছে ৩ হাজার ১৮ কোটি টাকা।
বিপিসি সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত পাওয়ার প্লান্টের জন্য ২০ লাখ টন ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে হয়েছে এবং ছয় মাসে এ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫১ কোটি টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খাতে ভর্তুকি দাঁড়াবে ১১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বিপরীতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। আর ডিজেল আমদানি হয়েছে ৮ লাখ টন। বিপরীতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা।
বিপিসির সূত্র মতে, প্রতিবছরই জ্বালানি ব্যয় বাড়ছে। বিগত ২০০৯-১০ অর্থবছরে ক্রুড, রিফাইন্ড ও লুব অয়েল খাতে খরচের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছর এ খাতে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৩৩৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকায়। সরকারি হিসাবে জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পয়েছে ৪১.৪ শতাংশ।
বিপিসি চেয়ারম্যান মুক্তাদির আলী জানান, চলতি অর্থবছর জ্বালানি খাতে সরকারকে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ভর্তুকির মধ্যে পেট্রোলিয়াম খাতে ১৬ হাজার কোটি টাকা, পিডিবির জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা ও গ্যাস খাতে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
ড. আকবর আলি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় জ্বালানির দাম বাড়ানো হলো, বাজেটে এর কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। জ্বালানি-মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়। বাজেটের বিষয়। কত টাকা, কেন, কোন খাতে ভর্তুকি দেওয়া হবে বাজেটে তার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা উচিত। কিন্তু তা ছিল না। বাজেটকে পাশ কাটিয়ে হঠাৎ করে যেভাবে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, এভাবে আমলাতন্ত্র তা করতে পারে না। কারণ জ্বালানির জন্য নতুন করে সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন সম্ভব নয়। এর দায় নেবে কে?
চলতি বছরের সাড়ে আট মাসে ফার্নেস অয়েলের দাম বেড়েছে চার দফা। এতে ২৬ টাকার ফার্নেস অয়েল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। মূল্যবৃদ্ধির হার শতভাগ। অর্থাৎ ভর্তুকির হারও বাড়ল শতভাগ। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফার্নেস অয়েল ব্যবহৃত হয়। মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফার্নেস অয়েলের অবদান পাঁচ শতাংশ। চলতি অর্থবছর ফার্নেস অয়েল বা রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করেছে ৪.৭১ শতাংশ। ভর্তুকি ৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। ডিজেলচালিত রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৬.৮২ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের সাত শতাংশ। ভর্তুকি ৫ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। হাইড্রো ইলেকট্রিসিটিচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৩.৫৬ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের চার শতাংশ। কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ২.৫৯ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের তিন শতাংশ। আর গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৮২.৮৩ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের ৮১ শতাংশ। এ খাতে ভর্তুকি ২ হাজার ৬০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, উৎপাদিত গ্যাসের ৪২ শতাংশ খরচ হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে আর পাঁচ শতাংশ ব্যয় হয় পরিবহন খাতে। পরিবহন খাতে গ্যাসের দাম ফিলিং স্টেশন পর্যায়ে ২৩ টাকা আর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরবরাহ করা হয় সর্বোচ্চ আড়াই টাকা দামে। ফলে এ খাতে সরকারকে ভর্তুকি গুনতে হয়।
এ দিকে চার মাসের ব্যবধানে ১৬ টাকা ঘনমিটার সিএনজি জনসাধারণকে কিনতে হচ্ছে ৩০ টাকায়। চার মাস আগে মে মাসে ১৮ টাকার সিএনজি দাম বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছিল। বৃদ্ধির হার ছিল ৫০ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর বিপিসি ৮ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা নিট লস দেয়। ফলে বিপিসির ক্রেডিট লিমিট আট হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করে যায়। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা হারায় বিপিসি। ওই সময় দ্রুত চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে বিপিসিকে উদ্ধার করে সরকার।
সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, আসলে জ্বালানি ভর্তুকি বৃদ্ধির কারণ রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ও বণ্টন প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা। আমাদের এখানে উৎপাদন ক্যাপাসিটির ওপর নির্ভর করে বিল করা হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিল হয় অনুমাননির্ভর। আর অনুমাননির্ভর হওয়ায় লুটপাটও চলছে সহজেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি বলেন, অতীতে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম বেড়ে যাওয়ার পর শুল্ক প্রত্যাহার করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এবারও কর তুলে দিয়ে তা করা যেত। ভর্তুকিও হ্রাস পেত। দেশে মূল্যবৃদ্ধির পর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম পড়ে গেছে। এ ছাড়া জ্বালানি আমদানিতে কী পরিমাণ শুল্ক ও কর আদায় করা হচ্ছে সরকার তা জানে। তা কমিয়ে দিলে দাম বাড়ানোর দরকার হয়তো পড়ত না। ভর্তুকির পরিমাণও কমত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সরকারকে সর্বোচ্চ ৭০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি আমদানি করতে হবে। এতে সরকারের গড় আমদানি ব্যয় দাঁড়াবে ৪ হাজার ৬৯৫ হাজার কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর এর বিপরীতে সরকারের শুল্ক আদায় হবে ৪ হাজার ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বিপিসি ২০০৭ সালে সরকারকে শুল্ক দিয়েছে ৩ হাজার ১৮ কোটি টাকা।
বিপিসি সূত্র জানায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত পাওয়ার প্লান্টের জন্য ২০ লাখ টন ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে হয়েছে এবং ছয় মাসে এ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫১ কোটি টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খাতে ভর্তুকি দাঁড়াবে ১১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বিপরীতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। আর ডিজেল আমদানি হয়েছে ৮ লাখ টন। বিপরীতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা।
বিপিসির সূত্র মতে, প্রতিবছরই জ্বালানি ব্যয় বাড়ছে। বিগত ২০০৯-১০ অর্থবছরে ক্রুড, রিফাইন্ড ও লুব অয়েল খাতে খরচের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছর এ খাতে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৩৩৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকায়। সরকারি হিসাবে জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পয়েছে ৪১.৪ শতাংশ।
বিপিসি চেয়ারম্যান মুক্তাদির আলী জানান, চলতি অর্থবছর জ্বালানি খাতে সরকারকে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ভর্তুকির মধ্যে পেট্রোলিয়াম খাতে ১৬ হাজার কোটি টাকা, পিডিবির জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা ও গ্যাস খাতে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
ড. আকবর আলি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় জ্বালানির দাম বাড়ানো হলো, বাজেটে এর কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। জ্বালানি-মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয়। বাজেটের বিষয়। কত টাকা, কেন, কোন খাতে ভর্তুকি দেওয়া হবে বাজেটে তার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা উচিত। কিন্তু তা ছিল না। বাজেটকে পাশ কাটিয়ে হঠাৎ করে যেভাবে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, এভাবে আমলাতন্ত্র তা করতে পারে না। কারণ জ্বালানির জন্য নতুন করে সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন সম্ভব নয়। এর দায় নেবে কে?
চলতি বছরের সাড়ে আট মাসে ফার্নেস অয়েলের দাম বেড়েছে চার দফা। এতে ২৬ টাকার ফার্নেস অয়েল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। মূল্যবৃদ্ধির হার শতভাগ। অর্থাৎ ভর্তুকির হারও বাড়ল শতভাগ। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফার্নেস অয়েল ব্যবহৃত হয়। মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফার্নেস অয়েলের অবদান পাঁচ শতাংশ। চলতি অর্থবছর ফার্নেস অয়েল বা রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করেছে ৪.৭১ শতাংশ। ভর্তুকি ৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। ডিজেলচালিত রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৬.৮২ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের সাত শতাংশ। ভর্তুকি ৫ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। হাইড্রো ইলেকট্রিসিটিচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৩.৫৬ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের চার শতাংশ। কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ২.৫৯ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের তিন শতাংশ। আর গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছে ৮২.৮৩ শতাংশ, যা মোট উৎপাদনের ৮১ শতাংশ। এ খাতে ভর্তুকি ২ হাজার ৬০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, উৎপাদিত গ্যাসের ৪২ শতাংশ খরচ হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে আর পাঁচ শতাংশ ব্যয় হয় পরিবহন খাতে। পরিবহন খাতে গ্যাসের দাম ফিলিং স্টেশন পর্যায়ে ২৩ টাকা আর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরবরাহ করা হয় সর্বোচ্চ আড়াই টাকা দামে। ফলে এ খাতে সরকারকে ভর্তুকি গুনতে হয়।
এ দিকে চার মাসের ব্যবধানে ১৬ টাকা ঘনমিটার সিএনজি জনসাধারণকে কিনতে হচ্ছে ৩০ টাকায়। চার মাস আগে মে মাসে ১৮ টাকার সিএনজি দাম বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছিল। বৃদ্ধির হার ছিল ৫০ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর বিপিসি ৮ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা নিট লস দেয়। ফলে বিপিসির ক্রেডিট লিমিট আট হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করে যায়। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা হারায় বিপিসি। ওই সময় দ্রুত চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে বিপিসিকে উদ্ধার করে সরকার।
সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, আসলে জ্বালানি ভর্তুকি বৃদ্ধির কারণ রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ও বণ্টন প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা। আমাদের এখানে উৎপাদন ক্যাপাসিটির ওপর নির্ভর করে বিল করা হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিল হয় অনুমাননির্ভর। আর অনুমাননির্ভর হওয়ায় লুটপাটও চলছে সহজেই।
0 comments:
Post a Comment