নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিমচন্দ্র ভৌমিকের জন্ম দেওয়া বিভিন্ন কেলেঙ্কারির তদন্তে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত দলকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদের নেতৃত্বে এই তদন্ত দলের সদস্যরা ৩১ অক্টোবর নেপালে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন পরিচালকও রয়েছেন এই তদন্ত দলে।
অন্য দেশের পতাকা নিয়ে গাড়িতে ভ্রমণ, নারী কেলেঙ্কারি, ভিসা দিতে হয়রানি, শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিতে ঘুষ, এমনকি নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানোর মতো অভিযোগও রয়েছে নিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, "এসব অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তদন্ত দল সবই খতিয়ে দেখবে।"
নিমচন্দ্রের এসব কেলেঙ্কারির বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত মে মাসে একটি প্রতিবেদন দেয়। এতে বলা হয়, নেপালের পররাষ্ট্র দপ্তর অনানুষ্ঠানিকভাবে নিমচন্দ্রকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। যদিও ওই প্রতিবেদন দেওয়ার পর পাঁচ মাসেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।
গত জুলাই মাসে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন যে, নিমচন্দ্র ভৌমিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তাদের হাতে এসেছে। এসব বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সে সময় জানান তিনি।
অবশ্য নিমচন্দ্র সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, কেউ কেউ তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নিমচন্দ্র বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০০৯ সালে নেপালের রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ পান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক নীল দলের শিক্ষক হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের গত সরকার আমলে টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদেও নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ছাত্র বিক্ষোভের সময় তিন জন শিক্ষকের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
গাড়িতে ভারতের পতাকা তোলা
মে মাসে দেওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নিমচন্দ্র ভৌমিকের কূটনৈতিক হিসেবে অপেশাদার আচরণ নেপালে দেশের ভাবমূর্তি বেশ ক্ষুন্ন করেছে।
কাঠমান্ডুতে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেএফআর জ্যাকবের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠকে নিমচন্দ্র তার গাড়িতে ভারতের পতাকা উড়িয়ে যান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো জ্যাকবের। তিনি তখন ভারতীয় সেনাবাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক ছিলেন।
২০১০ সালের ১৭ মার্চ কাঠমান্ডুর ইয়াক অ্যান্ড ইয়েতি হোটেলে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে নিমচন্দ্রের নির্দেশে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত ও নেপালের জাতীয় সঙ্গীতও বাজানো হয়।
নারী কেলেঙ্কারি
নিমচন্দ্র ভৌমিকের অসংখ্য নারী কেলেঙ্কারির মধ্যে বলিউড তারকা মনীষা কৈরালার সঙ্গে দেখা করতে অকূটনীতিকসুলভ আচরণের কথাও তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে।
কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশি পাঁচ তরুণের একটি চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেছিলেন নেপালের প্রভাবশালী কৈরালা পরিবারের সদস্য মনীষা। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় মনীষার দেখা পেতে তার বাড়িতেও ধরনা দিয়েছিলেন নিমচন্দ্র।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত করে জেনেছে, মনীষার বাড়িতে ঢুকতে আধা ঘণ্টা ধরে ফটকে দাঁড়িয়ে দেনদরবার চালিয়েছিলেন নিমচন্দ্র। তবে ফটক খোলেনি।
২০০৯ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাসের মুখপাত্র অপূর্ব শ্রীবাস্তবকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করেছিলেন বলেও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া বাংলাদেশি দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে নেপালের বেশ কয়েকজন নারীও রাষ্ট্রদূতের কাছে হেনস্তা হন।স্থানীয় বেশ কয়েকজন নারীকে দূতাবাসেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিয়েছেন নিমচন্দ্র।
রাষ্ট্রদূতের আচরণের মধ্য দিয়ে আত্মমর্যাদা বোধ বিসর্জন ও দায়িত্বনিষ্ঠার অভাব প্রকাশ পেয়েছে- বলা হয় প্রতিবেদনে।
নিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির সরাসরি অভিযোগ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তোলেন কাঠমান্ডু দূতাবাসের সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি নাসরিন জাহান লিপি। ওই মাসেরই মধ্যভাগে চার বাংলাদেশি তরুণীকে জড়িয়ে দূতাবাসে নিমচন্দ্রের কেলেঙ্কারির তিনি প্রত্যক্ষ সাক্ষী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃত্তির জন্য ঘুষ
২০০৯ ও ২০১০ সালে নেপালি শিক্ষার্থীদের দেওয়া বাংলাদেশি বৃত্তির ক্ষেত্রে 'নয়-ছয়' হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষাভিসা দেওয়ার নজিরও খুঁজে পেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃত্তির ক্ষেত্রে নেপালের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ব্যক্তি এমনকি সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশও উপেক্ষা করেছেন নিমচন্দ্র।
নেপালের যে সব শিক্ষার্থী সরাসরি শিক্ষা ভিসার আবেদন করে, নানা টালবাহানা করে তাদের আটকে পরে 'জটিলতার' অবসানের জন্য বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা তাদের ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যে সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দূতাবাস তথা নিমচন্দ্রের সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তদন্ত দল জানতে পেরেছে, অন্তত ছয়টি সরকারি বৃত্তি নিয়ে 'ঘুষবাণিজ্য' করেছেন নিমচন্দ্র, যার প্রতিটি ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলারের।
শিক্ষাবৃত্তির এ ধরনের অপব্যবহারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হিমালয়ের পাদদেশের দেশটিতে বেশ নাজুক হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নেপালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো
নেপালের অভ্যন্তরীণ বিশেষ করে মাওবাদীদের বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য রেখে কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ করার অভিযোগও উঠেছে নিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন প্রকাশ্য সভায়ও নেপালের এখনকার বিরোধী দল মাওবাদীদের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত। মাওবাদীদের কীভাবে ঠেকাতে হবে সে পরামর্শও তাকে দিতে দেখা গেছে।
নেপালের সরকারি মহলে নিমচন্দ্র গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন বলে তদন্ত দল প্রমাণ পেয়েছে। তার ব্যবহার ও অকূটনৈতিকসুলভ আচরণই এর জন্য দায়ী। কাঠমান্ডুর কূটনৈতিক মহলেও তার অবস্থান খুব নাজুক।
নিমচন্দ্রকে সরিয়ে একজন পেশাদার কূটনীতিককে রাষ্ট্রদূতের পদে নিয়োগ দিতে নেপালের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সচিবকে অনুরোধের কথাও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদের নেতৃত্বে এই তদন্ত দলের সদস্যরা ৩১ অক্টোবর নেপালে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন পরিচালকও রয়েছেন এই তদন্ত দলে।
অন্য দেশের পতাকা নিয়ে গাড়িতে ভ্রমণ, নারী কেলেঙ্কারি, ভিসা দিতে হয়রানি, শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিতে ঘুষ, এমনকি নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানোর মতো অভিযোগও রয়েছে নিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, "এসব অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তদন্ত দল সবই খতিয়ে দেখবে।"
নিমচন্দ্রের এসব কেলেঙ্কারির বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত মে মাসে একটি প্রতিবেদন দেয়। এতে বলা হয়, নেপালের পররাষ্ট্র দপ্তর অনানুষ্ঠানিকভাবে নিমচন্দ্রকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। যদিও ওই প্রতিবেদন দেওয়ার পর পাঁচ মাসেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার।
গত জুলাই মাসে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন যে, নিমচন্দ্র ভৌমিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তাদের হাতে এসেছে। এসব বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সে সময় জানান তিনি।
অবশ্য নিমচন্দ্র সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, কেউ কেউ তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নিমচন্দ্র বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ২০০৯ সালে নেপালের রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ পান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক নীল দলের শিক্ষক হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের গত সরকার আমলে টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদেও নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ছাত্র বিক্ষোভের সময় তিন জন শিক্ষকের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
গাড়িতে ভারতের পতাকা তোলা
মে মাসে দেওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নিমচন্দ্র ভৌমিকের কূটনৈতিক হিসেবে অপেশাদার আচরণ নেপালে দেশের ভাবমূর্তি বেশ ক্ষুন্ন করেছে।
কাঠমান্ডুতে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেএফআর জ্যাকবের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠকে নিমচন্দ্র তার গাড়িতে ভারতের পতাকা উড়িয়ে যান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো জ্যাকবের। তিনি তখন ভারতীয় সেনাবাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক ছিলেন।
২০১০ সালের ১৭ মার্চ কাঠমান্ডুর ইয়াক অ্যান্ড ইয়েতি হোটেলে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে নিমচন্দ্রের নির্দেশে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত ও নেপালের জাতীয় সঙ্গীতও বাজানো হয়।
নারী কেলেঙ্কারি
নিমচন্দ্র ভৌমিকের অসংখ্য নারী কেলেঙ্কারির মধ্যে বলিউড তারকা মনীষা কৈরালার সঙ্গে দেখা করতে অকূটনীতিকসুলভ আচরণের কথাও তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে।
কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশি পাঁচ তরুণের একটি চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেছিলেন নেপালের প্রভাবশালী কৈরালা পরিবারের সদস্য মনীষা। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় মনীষার দেখা পেতে তার বাড়িতেও ধরনা দিয়েছিলেন নিমচন্দ্র।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত করে জেনেছে, মনীষার বাড়িতে ঢুকতে আধা ঘণ্টা ধরে ফটকে দাঁড়িয়ে দেনদরবার চালিয়েছিলেন নিমচন্দ্র। তবে ফটক খোলেনি।
২০০৯ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাসের মুখপাত্র অপূর্ব শ্রীবাস্তবকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করেছিলেন বলেও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া বাংলাদেশি দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে নেপালের বেশ কয়েকজন নারীও রাষ্ট্রদূতের কাছে হেনস্তা হন।স্থানীয় বেশ কয়েকজন নারীকে দূতাবাসেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দিয়েছেন নিমচন্দ্র।
রাষ্ট্রদূতের আচরণের মধ্য দিয়ে আত্মমর্যাদা বোধ বিসর্জন ও দায়িত্বনিষ্ঠার অভাব প্রকাশ পেয়েছে- বলা হয় প্রতিবেদনে।
নিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির সরাসরি অভিযোগ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তোলেন কাঠমান্ডু দূতাবাসের সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি নাসরিন জাহান লিপি। ওই মাসেরই মধ্যভাগে চার বাংলাদেশি তরুণীকে জড়িয়ে দূতাবাসে নিমচন্দ্রের কেলেঙ্কারির তিনি প্রত্যক্ষ সাক্ষী বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃত্তির জন্য ঘুষ
২০০৯ ও ২০১০ সালে নেপালি শিক্ষার্থীদের দেওয়া বাংলাদেশি বৃত্তির ক্ষেত্রে 'নয়-ছয়' হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষাভিসা দেওয়ার নজিরও খুঁজে পেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃত্তির ক্ষেত্রে নেপালের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ব্যক্তি এমনকি সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশও উপেক্ষা করেছেন নিমচন্দ্র।
নেপালের যে সব শিক্ষার্থী সরাসরি শিক্ষা ভিসার আবেদন করে, নানা টালবাহানা করে তাদের আটকে পরে 'জটিলতার' অবসানের জন্য বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা তাদের ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যে সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দূতাবাস তথা নিমচন্দ্রের সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তদন্ত দল জানতে পেরেছে, অন্তত ছয়টি সরকারি বৃত্তি নিয়ে 'ঘুষবাণিজ্য' করেছেন নিমচন্দ্র, যার প্রতিটি ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলারের।
শিক্ষাবৃত্তির এ ধরনের অপব্যবহারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হিমালয়ের পাদদেশের দেশটিতে বেশ নাজুক হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নেপালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো
নেপালের অভ্যন্তরীণ বিশেষ করে মাওবাদীদের বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য রেখে কূটনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ করার অভিযোগও উঠেছে নিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন প্রকাশ্য সভায়ও নেপালের এখনকার বিরোধী দল মাওবাদীদের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত। মাওবাদীদের কীভাবে ঠেকাতে হবে সে পরামর্শও তাকে দিতে দেখা গেছে।
নেপালের সরকারি মহলে নিমচন্দ্র গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন বলে তদন্ত দল প্রমাণ পেয়েছে। তার ব্যবহার ও অকূটনৈতিকসুলভ আচরণই এর জন্য দায়ী। কাঠমান্ডুর কূটনৈতিক মহলেও তার অবস্থান খুব নাজুক।
নিমচন্দ্রকে সরিয়ে একজন পেশাদার কূটনীতিককে রাষ্ট্রদূতের পদে নিয়োগ দিতে নেপালের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সচিবকে অনুরোধের কথাও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment