তিনবিঘা করিডোর পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিগগির তিস্তা চুক্তি ও ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়টি সুরাহা করা হবে।
বুধবার দুপুরে ছিটমহল দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার প্রবেশদ্বার তিনবিঘা করিডোর পরিদর্শন করেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, "ভারতের সঙ্গে বর্তমান সময়ের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলে একদিন সব সমস্যার সমাধান হবে। আশা করছি শিগগির তিস্তা চুক্তি করতে পারবো।"
ছিটমহল বিনিময়ের বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, "ইতোমধ্যে সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন করেছি। আশা করছি এ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে।" ট্রানজিট বিষয়ে তিনি বলেন, "আমরা সব সময় কানেক্টিভিটিতে বিশ্বাস করি।"
বেলা পৌনে ১টার দিকে শেখ হাসিনা তিনবিঘা করিডোরে পৌঁছান। এ সময় ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী গোলাম নবী আজাদ ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র প্রসাদ সিং তিনবিঘা করিডোর গেটে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান। পরে ২০ মিনিটের মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় শেষে উপহার বিনিময় করেন তারা।
করিডোর পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী সেখানে একটি লিচু গাছের চারা রোপণ করেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দহগ্রাম দ্বিমুখী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা বিদ্যুৎ সঞ্চালন কার্যক্রম, দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবন এবং ১০ শয্যার দহগ্রাম হাসপাতালের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমান বন্দর থেকে বিমানে করে সৈয়দপুর যান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে হেলিকাপ্টারে লালমনিরহাট পৌঁছান বেলা ১১টায়।
বিকাল ৩টায় পাটগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদেরও জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে সব আয়োজন শেষ হয়েছে। জনসভায় বিপুল সংখ্যক লোক সমাগম হবে বলে আশা করছি আমরা।"
তিন বিঘা করিডোর
গত ৬ সেপ্টেম্বর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় দুই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার দুই দিনের মাথায় ৮ সেপ্টেম্বর সব সময়ের জন্য খুলে দেওয়া হয় দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার প্রবেশদ্বার তিনবিঘা করিডোর। এর আগ পর্যন্ত ওই করিডোর দিয়ে ভারতের নিরাপত্তারক্ষীদের পাহারার মধ্যে কেবল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলাচল করতে পারতো বাংলাদেশিরা।
সন্ধ্যার পর বন্ধ হয়ে যেতো 'তিন বিঘা গেইট'। ।
কাগজে-কলমে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার অধীন হলেও দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহলে যাওয়ার পথ হিসেবে ১৯৯২ সালের ২৬ জুন তিন বিঘা জমি ইজারা পায় বাংলাদেশ। এটিই পরিচিত হয় তিন বিঘা করিডোর নামে।
৮ সেপ্টেম্বর এই করিডোর সব সময়ের জন্য খুলে দেওয়ার পর উল্লাসে মেতে ওঠে ছিটমহলের বাসিন্দারা। তাদের কাছে এ যেন 'সত্যিকারের' স্বাধীন হওয়ার আনন্দ।
বুধবার তিন বিঘায় উপস্থিত হয়ে সেই 'স্বাধীনতারই' আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল এবং ভারতে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। ১৯৭৪ সালের চুক্তির আওতায় চলতি বছর স্বাক্ষরিত প্রটোকলের মাধ্যমে এসব ছিটমহল বিনিময় করবে দুই দেশ। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে সাড়ে ৬ কিলোমিটার অচিহ্নিত সীমানা এবং অপদখলীয় ভূমি সমস্যারও সমাধান করা হবে এর মাধ্যমে।
Ads by Cash-71
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment